ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরা দ্বীপে
আমন ধান কাটার পর পরই রবিশস্যের মৌসুমে কৃষকেরা মূলত মুগ ডাল, মরিচ,
খেসারী, হেলাই, তিসি, সরিষা, বাদাম ও সবজি চাষ করলেও গত দুই বছর জিরা চাষ
করে বেশ সাফল্য পাওয়ায় এ বছর রবি মৌসুমে জিরা চাষে আগ্রহ তাদের মাঝে
যথেষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷
পরীক্ষামূলকভাবে জিরার চাষ করে সফল হয়েছেন
চাষি উত্পল চন্দ্র দাস, মোছলেহউদ্দিন, বাবুল, রায়হান, বেলায়েত, মনির, আঃ
লতিফ, মোঃ আকবর হোসেন, মোঃ হানিফ প্রমুখ৷ জানা যায়, বাজারে যে জিরা পাওয়া
যায় সেই জিরা বীজই শুকনা অবস্থায় বপন করে এই জিরা চাষ করা সম্ভব৷ জিরা
ভিজানো যাবে না এবং পরিমিত জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে মাটি ভালোভাবে
গুঁড়া করে জিরা বুনতে হয়৷ প্রতি ১ শতাংশ জমিতে টিএসপি ৬শ গ্রাম, এমওপি ৩শ
গ্রাম এবং জৈব সার ৩শ গ্রাম দিতে হবে৷ জিরার বীজ বুনার পর মাটি ভালভাবে
সমান করে মিশিয়ে দিতে হয়৷ বীজ বুনার পর চারার বয়স ১৫/২০ দিন হলে ১ বার ও
ফুল আসার পর ১ বার পানি দিতে হবে৷ ১০০/১২০ দিনের মধ্যে কৃষক জিরার ফসল ঘরে
তুলতে পারবে৷
মনপুরার উপজেলার ১০টি স্পটে
পরীক্ষামূলকভাবে জিরার চাষ করা হয়েছে৷ এর মধ্যে মনপুরা ইউনিয়নে ২টি, হাজির
হাট ইউনিয়নে ৪টি, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নে ২টি ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে
২টি স্থানে জিরার চাষ করা হয়েছে৷ সাদা জিরা, মিষ্টি জিরা (মৌরি),
কালিজিরা, মোতি, ধনিয়া, পোসত্মদানা (রাস্কুনী) সব ফসলই উপকূলের এই দ্বীপে
চাষ হচ্ছে৷
চাষি উত্পল চন্দ্র দাস জানান, বাজার থেকে
১শ গ্রাম সাদা জিরা এনে ২ শতাংশ জমিতে বপন করেন তিনি৷ কোন রোগ-বালাই ছাড়াই
যেভাবে জিরার গাছ বেড়ে উঠছে এবং ফুল দেখা যাচ্ছে তাতে বাম্পার ফলন হবে বলে
আশা করা হচ্ছে৷ ১ শতাংশ জমিতে জিরা চাষ করতে ২শ টাকা খরচ হয়েছে৷ আর ১ শতাংশ
জমিতে জিরা উত্পাদন করা যাবে ২ থেকে আড়াই কেজি৷ যার বাজার মূল্য হবে ১
হাজার টাকা৷ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাহবুবার রহমান বলেন, জিরা চাষ করে
অনেক চাষি স্বাবলম্বী হয়েছেন৷ জিরা চাষিদের কৃষি বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা
করছে৷
উত্তর সমূহ