পুষ্টি মূল্য
কচুতে ভিটামিন এ এবং প্রচুর পরিমানে লৌহ থাকে।

ব্যবহার
যে সমস্ত কচু দাড়াঁনো পানিতে চাষ করা যায় তাকে পানি কচু বলে। আমাদের দেশে কচু একটি সুস্বাদু সবজি হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের পানি কচুর বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন নারিকেল কচু, জাত কচু, বাশঁ কচু ইত্যাদি।

উপযুক্ত জমি ও মাটি
পলি দোআঁশ ও এটেল মাটি পানি কচু চাষের জন্য উপযুক্ত ।

জাত পরিচিতি

ক্রম   

জাতের নাম  বৈশিষ্ট্য  ফলন (টন/হেক্টর)
১.বারি পানি কচু-১ (লতিরাজ)লতি লম্বায় ৯০-১০০ সেমি. সামান্য চেপ্টা, সবুজ । লতি সিদ্ধ করলে সমানভাবে সিদ্ধ এবং গলা চুলকানি মুক্ত হয়। বোঁটা এবং পাতার সংযোগস্থলের উপরিভাগের রং বেগুনি। জীবনকাল ১৮০-২১০ দিন। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এর চাষাবাদ করা যায়।লতি : ২৫-৩০
কান্ড : ১৮-২২
২.বারি পানি কচু-২লতি গোলাকার, অপেক্ষাকৃত মোটা ও গাঢ় সবুজ রঙের হয়। এ কচুতে গলা চুলকায় না এবং সিদ্ধ করলে সমানভাবে সিদ্ধ হয়।লতি : ২৫-৩০
কান্ড : ১৮-২২
৩.বারি পানি কচু-৩কান্ড গোলাকার, মোটা ও হালকা সবুজ রঙের হয় এবং গলা চুলকানীমুক্ত। সিদ্ধ করলে সমানভাবে সিদ্ধ হয়।লতি : ২৫-৩০
কান্ড : ১০-১২

চারা রোপণ
আগাম ফসলের জন্য কার্তিক (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর)। নাবী ফসলের জন্য মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য বৈশাখ (মার্চ-এপ্রিল) মাসে লাগানো যায়। দক্ষিণাঞ্চলে বৎসরের যেকোন সময় লাগানো যায়। প্রতি শতকে প্রায় ১৫০টি লতা রোপণের জন্য প্রয়োজন। জমি ভালভাবে তৈরি করে লাইন থেকে লাইন ২ ফুট (৬০ সে.মি) এবং গাছ থেকে গাছ ১.৫ ফুট (৪৫ সে.মি) রাখতে হবে।

সার ব্যবস্থাপনা

সারের নাম    

সারের পরিমাণ ( প্রতি শতকে)
ইউরিয়া৬০০ গ্রাম
টিএসপি৫০০ গ্রাম
এমওপি৭৫০ গ্রাম
জিপসাম৪৫০ গ্রাম
গোবর৫০ কেজি

তবে এলাকা ও মাটির চাহিদা অনুযায়ী দস্তা সার ও বোরণ সার ব্যবহার করতে হতে পারে। গোবর, টিএসপি, জিপসাম এবং এমওপি সার জমি তৈরির শেষ সময়ে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ২-৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হয়, তবে প্রথম কিস্তি রোপণের ২০-২৫ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করা দরকার।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা
পানি কচুর গোড়ায় দাড়াঁনো পানি রাখতে হবে এবং দাঁড়ানো পানি মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে হবে। লতিরাজ জাতের জন্য দাঁড়ানো পানির গভীরতা ৮-১০ সে.মি হওয়া দরকার।

রোগ ব্যবস্থাপনা
কচুর পাতার মড়ক রোগ
ক্ষতির নমুনা:
পাতার উপর বেগুনি থেকে বাদামি রংয়ের গোলাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে এ সমস্ত দাগ আকারে বেড়ে একত্রিত হয়ে যায় এবং পাতা ঝলসে যায়। পরে তা কচু ও কন্দে বিস্তার লাভ করে।

অনুকূল পরিবেশ:
উচ্চ তাপমাত্রা, আর্দ্র আবহাওয়া ও পর পর ৩-৪ দিন বৃষ্টি থাকলে এ রোগের মাত্রা খুব বেড়ে যায়।

ব্যবস্থাপনা:
রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রিডোমিল এম জেড-৭২ ডব্লিউ অথবা ডাইথেন এম ৪৫ মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োগ করার আগে ট্রিকস মিশিয়ে নিতে হয়।

ফসল সংগ্রহ
রোপণের ২ মাস পর থেকে ৭ মাস পর্যন্ত লতি হয়ে থাকে।